ঢাকা ১৯শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:২০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৪
বাংলা সিলেট ডেস্ক: সাদা পোশাকে পাকিস্তানে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। সিরিজ জেতার পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। তখনই পুরো দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলেন তিনি। যার ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেছেন পাকিস্তান সিরিজ জয়ী বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরা। ঐতিহাসিক সিরিজ জেতায় সেখানে পুরো দলকে প্রধান উপদেষ্টা সংবর্ধনা দিয়েছেন।
সাধারণভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেটে একটি বিষয় প্রচলিত আছে যে, সংবর্ধনা মানেই পুরস্কার। প্রধান উপদেষ্টার সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ঘিরে এমন আলোচনাই হচ্ছিল। ক্রিকেটাররা হয়তো গাড়ি, বাড়ি, জমি কিংবা টাকা পয়সা পেতে যাচ্ছেন! কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জেতার পর বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের সংবর্ধনা দেওয়া হলেও সেসব কোন পুরস্কারের ঘোষণা আসেনি। যদিও ক্রিকেটার থেকে শুরু করে বিসিবির পরিচালকরাও বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন।
বিসিবির নব নির্বাচিত পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘আমাদের সমাজের একটি বড় ভুল ধারণা হচ্ছে, সংবর্ধনা মানেই নানা পুরস্কার ঘোষণা। ওনার মতো (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) একজন মানুষের সঙ্গে আমরা সাক্ষাৎ করতে পেরেছি, সেটাইতো অনেক বড় পুরস্কার। উনি সবার সামনে এসে দাঁড়ালেন, কথা বললেন এটাইতো অনেক বড় কিছু। এরচেয়ে বড় পুরস্কার আর কী হতে পারে। উনি বাংলাদেশ সরকারের প্রধান, পুরো জাতিকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। এর চেয়ে বড় ট্রিটতো আর কিছুতে হতে পারে না।’
বোর্ড পরিচালক ফাহিমের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন জাতীয় দলের সিনিয়র এক ক্রিকেটার। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেছেন, ‘উনি আমাদের যেভাবে মোটিভেট করলেন, এটাইতো পুরস্কার। আমরা সবাই দারুণ কিছু সময় ওনার সঙ্গে কাটালাম। আমি বলবো যে, ওনার কথাগুলো আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম শিক্ষা হয়ে থাকবে। তার কথাই আমাদের কাছে বড় পুরস্কার।’
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ক্রিকেটারদের স্বাগত জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা পাকিস্তানে দেশের ক্রিকেটারদের সাফল্যকে ঐতিহাসিক বলে অভিহিত করেন। এই অর্জন পুরো জাতিকে গর্বিত করেছে বলে মনে করেন তিনি, ‘আমি জয়ের পর অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আপনাদের সবার সঙ্গে দেখা করতে মুখিয়ে ছিলাম, জাতির পক্ষ থেকে আপনাদের অভিনন্দন জানাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলাম।’
এদিকে, ক্রিকেটাররা পুরো অনুষ্ঠান উপভোগ করেছেন বলে জানিয়েছেন পরিচালক ফাহিম। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘উনি ক্রিকেটারদের ধন্যবাদ দিয়েছেন। পুরো জাতিকে এক করতে ক্রিকেটাররা যে ভূমিকা রেখেছেন, তার প্রশংসা করেছেন। সবচেয়ে বড় কথা দেশের কঠিন সময়টাতে পাকিস্তানকে হারানোর মধ্য দিয়ে ক্রিকেটাররা পুরো জাতিকে যেভাবে ঐক্যবদ্ধ করেছেন, তার জন্য ক্রিকেটারদের প্রংশসা করেছেন। তার কথাগুলো ক্রিকেটারদের জন্য খুবই উৎসাহব্যাঞ্জক ছিল। ক্রিকেটাররাও পুরো অনুষ্ঠান প্রাণ ভরে উপভোগ করেছেন।’
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত পাকিস্তান সিরিজের সাফল্যের কারণ হিসেবে খেলোয়াড় এবং কোচিং স্টাফদের কঠোর পরিশ্রমের গুরুত্বের কথা বলেছেন। শান্ত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে তাদের আমন্ত্রণের জন্য ধন্যবাদ জানান। আরও বলেছেন, এই সাক্ষাৎ তাদের ভবিষ্যতে আরও সাফল্য অর্জনে উৎসাহিত করবে, ‘প্রত্যেক খেলোয়াড় এখানে আসতে পেরে খুশি। এটা সত্যিই আমাদের অনুপ্রাণিত করবে।’
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া কঠিন সময়ে সাফল্য আনার জন্য খেলোয়াড়দের স্বাগত জানিয়েছেন। অনুষ্ঠানে ক্রিকেটাররা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিসিবির সভাপতি ফারুক আহমেদ, পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, আগস্ট-সেপ্টেম্বরে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ দুই টেস্ট খেলতে পাকিস্তান সফর করে বাংলাদেশ। এই সফরে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জেতে লাল-সবুজরা। প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটের বড় জয়ের পর দ্বিতীয় টেস্টেও ৬ উইকেটে জয় তুলে নেয় নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
সম্পাদকীয় কার্যালয় : আছমান ম্যানশন, কদমতলী সিলেট। নিউজ : ০১৬-৪২৫০৫৪৬৬
Design and developed by DHAKA-HOST-BD