ঢাকা ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:৫১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৯, ২০২৪
বাংলা সিলেট ডেস্ক: সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের উপব্যবস্থাপক মইনুল হোসেন আয়ানীকে ‘হত্যার’ ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় আসামি করা হয়েছে ৯ জনকে।
মইনুল হোসেন আয়ানী (৫০) জৈন্তাপুরের চিকনাগুল ইউনিয়নের উমনপুর গ্রামের মরহুম ঈসা মেম্বারের ছেলে। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের।
গত ১৩ জুন রাতে ‘হত্যা’ করা হয় আয়ানীকে। ওই সময় বিষয়টি দুর্ঘটনা বলে ছড়ানো হয়। শুরুতে মামলা করেনি তার পরিবার। পরে গত ৭ জুলাই আদালতে মামলার আবেদন করা হয়। আদালত গত ৩০ সেপ্টেম্বর মামলা রেকর্ড করতে থানাকে আদেশ দেন। পরে গত ৩ অক্টোবর জৈন্তাপুর থানায় হত্যা মামলা রেকর্ড করা হয়। মামলার বাদী নিহতের ভাই নাজমুল হোসেইন এমদাদ।
মামলার এজাহারে ৯ জনের নামোল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন- উমনপুর গ্রামের তাহের আলীর ছেলে উমর আলী (২২), সমসুর উদ্দিনের ছেলে সোহেল আহমদ বারেক (২২), আব্দুর রহিমের ছেলে ইউসুফ আলী (২২), তাহের আলীর ছেলে সুবেদ আলী (২১), মরম আলীর ছেলে হরমুজ আলী (৪২), সিদ্দেক আলীর ছেলে মোহাম্মদ আলী (৪২), জাবিদ আলীর ছেলে মহররম আলী (৬০), সিদ্দেক আলীর ছেলে তাহের আলী (৪৫) ও আব্দুর রহমানের ছেলে সমসুর ইসলাম (৫৪)।
মামলার এজাহারে ৭ জন সাক্ষীর নামোল্লেখ করা হয়েছে।
সিলেটের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. আবু জাহের বাদল গত ৩ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৩ জুন প্রাতিষ্ঠানিক কাজ শেষে রাত সাড়ে ১২টার দিকে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন মইনুল হোসেন আয়ানী। পথিমধ্যে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের ৮নং কূপের সামনে একটি পিকআপ দিয়ে আয়ানীর মোটরসাইকেল গতিরোধ করে। প্রথমে ১নং আসামি উমর আলী রড বা পাইপ দিয়ে মাথার পিছন দিকে বাড়ি মারে। পরে ২নং আসামি সোহেল আহমদ বারেক জিআই পাইপ দিয়ে আঘাত করে আয়ানীর হাত ভেঙ্গে ফেলে। অন্যান্য আসামিরা লোহার রড ও পাইপ দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে আয়ানীকে হত্যা করে।
সড়কে পড়ে থাকা আয়ানীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত ঘোষণা করা হয়। শুরুতে স্বজনদের ধারণা ছিল এটি দুর্ঘটনা। কিন্তু মরদেহে বিভিন্ন ধরনের আঘাতের চিহ্ন থাকায় তাদের সন্দেহ দানা বাঁধে। গত ২৮ জুন বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মসজিদে গ্রামের মানুষ সম্মিলিত আলোচনায় বসেন। সেখানে ৩নং আসামি ইউসুফ আলী নিজের ‘অপরাধবোধ’ থেকে আয়ানীকে কিভাবে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা স্বীকার করেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, স্থানীয় আজাদ খানের বাড়ির লেচু চুরির ঘটনায় আসামিরা অভিযুক্ত ছিলেন। এ ঘটনায় গত ২৫ মে গ্রামে শালিস বৈঠক হয়। সেখানে জোরালো ভূমিকা রাখেন মইনুল হোসেন আয়ানী। এতে অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। শালিসের পরবর্তী তারিখ ধার্য্য ছিল ১৪ জুন। এর আগের রাতেই আক্রোশের বশে আসামিরা আয়ানীকে হত্যা করে।
এজাহার অনুসারে, আয়ানী নিহতের ঘটনায় প্রথমে সড়ক পরিবহন আইনে দুর্ঘটনা উল্লেখ করে একটি মামলা করেন তামাবিল হাইওয়ে থানার এটিএসআই হিজম পবিত্র সিংহ। পরবর্তীতে এটি দুর্ঘটনা নয় বলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদনের প্রেক্ষিতে পরে আদালত হত্যা মামলা রেকর্ড করতে জৈন্তাপুর থানাকে নির্দেশ দেন।
মামলার বাদী নাজমুল হোসেইন এমদাদ মামলার বিষয়টি সিলেটভিউকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা গত ৭ জুলাই আদালতে মামলার আবেদন করি। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর আদালত মামলা রেকর্ড করতে আদেশ দেন। ৩ অক্টোবর থানায় মামলা রেকর্ড হয়েছে।’
সম্পাদকীয় কার্যালয় : আছমান ম্যানশন, কদমতলী সিলেট। নিউজ : ০১৬-৪২৫০৫৪৬৬
Design and developed by DHAKA-HOST-BD