জামায়াত দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব কারও কাছে বিলিয়ে দিতে রাজি হয়নি: আমির

প্রকাশিত: ৫:২১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৩, ২০২৪

জামায়াত দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব কারও কাছে বিলিয়ে দিতে রাজি হয়নি: আমির

বাংলা সিলেট ডেস্ক: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠার তাণ্ডব চালিয়ে বাংলাদেশের মানবতা, গণতন্ত্রকে এবং জনগণের ইচ্ছা ও আশা-আকাঙ্ক্ষাকে জবাই করা হয়েছিল। ওই দিনই সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশ পথ হারিয়েছিল। জামায়াত দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব কারে কাছে বিলিয়ে দিতে রাজি হয়নি।
রবিবার (১৩ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের রুকন (সদস্য) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াতের আমির বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে সাজানো-পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসেছিল তারা (আওয়ামী লীগ)। এখন তাদের নাম সাহস করে কেউ নেয় না। তাদের দল (আওয়ামী লীগ) যারা করে, তারাও সেই নাম নিতে চায় না। আমরা মজলুম জনগণ তাদের নাম নেবো কেন?’

তিনি বলেন, ‘তাদেরকে তারা নিজেরাই নিষিদ্ধ করার ইতিহাস আছে। তারা যখন বাকশাল কায়েম করে তখন তাদের দলসহ সব রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করেছিল। আর এবার আল্লাহর সাহায্য নিয়ে জনগণ তাদের দলকে নিষিদ্ধ করেছে।’
ডা. শফিকুর বলেন, ‘সাড়ে ১৫ বছর দাপটের সঙ্গে তারা দেশ শাসন করেছে। ক্ষমতায় আসার মাত্র ২ মাসের মাথায় দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর গায়ে তারা আঘাত করে ৫৭ জন চৌকস ও দেশপ্রেমিক, প্রতিশ্রুতিশীল সেনা কর্মকর্তাকে বেদনাদায়কভাবে হত্যা করেছিল।’

তিনি বলেন, ‘সেনা কর্মকর্তাদের হত্যার ঘটনায় তদন্তের যে উদ্যোগ সরকার নিয়েছিল, তা জনগণকে ধোকা দেওয়ার জন্য, নেপথ্যের নায়কদের, হুকুমদাতাদের, দুষ্কৃতিকারীদেরকে আড়াল করার জন্য। মিডিয়ার সদস্যরা হাতের পুতুল ও বলির পাঠা ছিল। এদের সংখ্যা পঞ্চাশের অধিক ছিল না।’

২০১২ সালে কারাবরণ করে কারাঅভ্যন্তরে সেই খুনিদের সঙ্গে নিজের কথোপকথনের সময় তাদের কাছে যে বিবরণ পেয়েছেন তা তিনি (আমির) তুলে ধরে বলেন, ‘তিনি একজন খুনির কাছে জানতে চেয়েছিলেন— এই ষড়যন্ত্রের নায়ক কারা? জবাবে খুনি নাম বলেছিল। তার ভাষ্যমতে— সেই খুনিই দেশনায়কে পরিণত হয়েছিল’, বলেন তিনি।

জামায়াতের আমির বলেন, ‘বিডিআর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের নায়ক-নায়িকারা তাদের অপরাধের পাওনা এখনো পায়নি। এ পাওনা তাদেরকে পেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পর তারা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ওপর আঘাত দিতে শুরু করে। কারণ, তারা জানতো জামায়াত দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব কারও কাছে বিলিয়ে দিতে রাজি হয়নি। বিক্রি করতে রাজি হয়নি এবং কোনও অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেনি।’

তিনি আরও বলেন, তাই তারা তিলে তিলে গড়ে ওঠা জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিচারিক হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দুনিয়া থেকে বিদায় করেছে। বর্তমানে রাজপথের স্লোগান হলো ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। জামায়াতের স্লোগানও ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস।’

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় রুকন সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বৈষ্যমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ নাসিব হাসান রিয়ানের পিতা মো. গোলাম রাজ্জাক।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য আব্দুর রব,কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম প্রমুখ।