মুহম্মদ জাফর ইকবালকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি

প্রকাশিত: ৬:০৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৯, ২০২৪

মুহম্মদ জাফর ইকবালকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি

বাংলা সিলেট ডেস্ক: মানবতাবিরোধী ও গণহত্যার মামলায় বরেণ্য শিক্ষাবিদ ও লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবালসহ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

গণহত্যায় উস্কানিদাতা হিসেবে এই মামলায় জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আদালতের প্রধান কৌঁসুলি মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। যাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ আওয়ামী সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রীও রয়েছেন বলে জানিয়েছেন আইসিটির প্রধান কৌঁসুলি।

প্রসঙ্গত, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘রাজাকার’ উক্তির প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এক বিক্ষোভ মিছিল করেন। ১৪ জুলাই রাতের ওই মিছিলে তারা স্লোগান দেন, ‘তুমি কে আমি কে – রাজাকার, রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে – স্বৈরাচার, স্বৈরাচার।’ এই স্লোগান ঘিরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আওয়ামী সরকারের ঘনিষ্ঠ বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত শিক্ষক ও লেখক ড. মুহম্মদ জাফর।

১৬ জুলাই ‘সাদাসিধে কথা’ নামে নিজের একটি ওয়েবসাইটে বিষয়টি নিয়ে দুই প্যারায় ছোট্ট মতামত লিখেছেন তিনি। তার নিজ হাতে লেখা চিরকুটও সেখানে আপলোড করা হয়।

সেখানে তিনি লেখেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার বিশ্ববিদ্যালয়, আমার প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়। তবে আমি মনে হয়, আর কোনো দিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চাইব না। ছাত্রছাত্রীদের দেখলেই মনে হবে, এরাই হয়ত সেই ‘রাজাকার’। আর যে কয়দিন বেঁচে আছি, আমি কোনো রাজাকারের মুখ দেখতে চাই না। একটাই তো জীবন, সেই জীবনে আবার কেন নতুন করে রাজাকারদের দেখতে হবে?”

নিবন্ধনের এ অংশটি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ক্ষোভ দেখা দেয়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে।

শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনই রূপ নেয় ২৪’ এর গণঅভ্যুত্থানে, ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। তার দলের অনেক নেতাও দেশটিতে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পরে আগের সরকারের ঘনিষ্ঠ অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

অধ্যাপক জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়ার বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় উস্কানিদাতা হিসেবে চিহ্নিত তিনি। এই আন্দোলন দমানো এবং হত্যা-গণহত্যা সংঘটনে তার উস্কানি তৎকালীন সরকারকে মদদ দিয়েছে। তাই তিনি এই গণহত্যার দায় থেকে দূরে থাকতে পারেন না।’

তিনি বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে যারা হত্যাকাণ্ডের শিকার তাদের পরিবারের সদস্যরা ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দিয়েছে। এর তদন্ত ও বিচার শুরু হলে তিনি নিশ্চয় সুবিচার পাবেন।