বন থেকে বের হয়ে আসছে ‘বিপদগ্রস্ত’ বন্যপ্রাণী

প্রকাশিত: ৯:১৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৫, ২০২৫

সিলেট ডেস্ক :: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় সম্প্রতি সপ্তাহের ব্যবধানে তিনটি বন্যপ্রাণীকে লোকালয় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে উদ্ধারকৃত বন্যপ্রাণীদের ইতোমধ্যে বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

শনিবার বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল বলেন, আবাসস্থল বিপন্ন এবং চরম খাদ্য সংকটের কারণে বনের প্রাণীরা লোকালয়ে চলে আসাছে। কাকিয়াছড়া মন্দিরের সামনে স্থানীয় শিশুরা একটি লজ্জাবতী বানর দেখতে পেয়ে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্টাফ রাহেলকে জানানো হয়। খবর পেয়ে পরিবেশকর্মী রাজদীপ দেব দীপকে নিয়ে গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে লজ্জাবতী বানরটিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করি। পরবর্তীতে বানরটিকে বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় শ্রীমঙ্গল শহরতলীর কাকিয়াছড়া চা বাগান এলাকার লোকালয় থেকে একটি লজ্জাবতী বানর উদ্ধার করেছে বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন।

বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়, ৩০ মার্চ উপজেলার জাগছড়া চা বাগান এলাকা থেকে ১২ ফুট লম্বা এবং ১৫ কেজি ওজনের একটি অজগর সাপ উদ্ধার করা হয়। ৩১ মার্চ উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের ভাগলপুর গ্রাম থেকে আরেকটি লজ্জাবতী বানর উদ্ধার করেছে করে বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছে বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন।

স্বপন দেব সজল জানান, বনে বসবাসরত প্রাণীদের খাবারের তীব্র সংকট এবং বন্যপ্রাণীদের বসবাসের পরিবেশ নষ্ট হওয়াতে প্রাণীরা লোকালয়ের দিকে চলে আসছে। এদের মধ্যে কোনো কোনোটি মানুষের আক্রমণের শিকার হয়ে শারীরিকভাবে ক্ষতবিক্ষত এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে। এছাড়াও ব্যস্ততম পাকা সড়ক বা রেললাইন পারাপারের সময় কাটা পড়ে, বৈদ্যুতিক তারের সাথে জড়িয়ে মারাত্মকভাবে আহত হয় এবং কোনো কোনোটা মারাও যায়।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ জানায়, আইইউসিএন, বাংলাদেশ এর ‘রেডলিস্ট’ অনুসারে লজ্জাবতী বানর ‘বিপদগ্রস্ত’ প্রাণী। এর ইংরেজি নাম Bengal slow loris এবং বৈজ্ঞানিক নাম Nycticebus bengalensis। এরা নিশাচর এবং স্তন্যপায়ী প্রাণী। পাহাড়ি সবুজ বনের উঁচু গাছগাছালিতে এরা অবস্থান করে। আর অজগর সাপের ইংরেজি নাম Python এবং বৈজ্ঞানিক নাম Python molurus।

আইইউসিএন, বাংলাদেশের ‘রেডলিস্ট’ অনুসারে অজগর সাপের সংরক্ষণ অবস্থা ‘বিপদগ্রস্ত’ হিসেবে আমাদের প্রকৃতিতে টিকে রয়েছে।