ঢাকা ৭ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৬, ২০২৫
বাংলা সিলেট ডেস্ক: কুমিল্লার তিতাসে তিন বন্ধুর বিরুদ্ধে অপর বন্ধুকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। পুঞ্জীভূত ক্ষোভ থেকে ঘটনার সূত্রপাত বলে দাবি পুলিশের। এর আগে, শুক্রবার (৪ এপ্রিল) বাদ মাগরিব উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের গাজীপুর বাস্তুহারা পল্লিতে এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার রাতেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে পুলিশ। শনিবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে কোর্টে প্রেরণ করা হয়।
নিহত ওই যুবক বাস্তুহারা পল্লির মোহাম্মদ আলীর ছেলে রুবেল মিয়া (২৭)। গ্রেফতাররা হলেন- একই এলাকার জয়নাল আবেদীন ও তার ছেলে মোহাম্মদ আলী (৩০), শাহজাহানের ছেলে মো. ইয়াছিন (৩২) এবং কামাল খানের ছেলে মো. তোফাজ্জল (৪৫)। জয়নাল আবেদীন ছাড়া বাকিরা সম্পর্কে নিহতের বন্ধু।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামিদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানান, নিহত রুবেল মিয়া ও আটক মোহাম্মদ আলী, মো. ইয়াছিন এবং মো. তোফাজ্জল বন্ধু। তারা এলাকায় মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এবং সবাই মাদকসেবী। কিছুদিন আগে আটক ইয়াছিনের স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়। এই চলে যাওয়ার কারণ হিসেবে ইয়াছিন নিহত রুবেলকে দায়ী করে। এ ছাড়াও সম্প্রতি রুবেলের সঙ্গে অপর তিন বন্ধুর ইয়াবা সেবন ও বিক্রির টাকা নিয়েও দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। ঘটনার একদিন আগে একটি মোবাইল ফোন নিয়ে চার বন্ধুর মধ্যে তর্কবির্তক ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসব কারণে ইয়াছিন পরিকল্পনা করে তোফাজ্জল ও মোহাম্মদ আলীর সহযোগিতায় রুবেলকে উচিত শিক্ষা দেবে।
শুক্রবার মাগরিক নামাজের আগে অন্যান্য দিনের মতো মোহাম্মদ আলীর ঘরে অপর তিন বন্ধু রুবেল, ইয়াছিন ও তোফাজ্জল একত্রিত হয়। চার জনের টাকা দিয়ে ইয়াবা কিনে আনে। ঘরের মেঝেতে গোল করে বসে তারা ইয়াবা সেবন করে। ইয়াবা সেবন করা অবস্থায় পেছন থেকে ইয়াছিন হাতুড়ি দিয়ে রুবেলের ঘাড়ে আঘাত করে। এতে রুবেলের ঘাড়ের ওপরের অংশ ফেটে রক্তপাত শুরু হয় এবং রুবেল অজ্ঞান হয়ে পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে ঘরে থাকা কুড়াল দিয়ে মোহাম্মদ আলীসহ অন্য বন্ধুরা রুবেলের মাথায় একাধিকবার কোপ মারে। মুহূর্তের মধ্যে ঘরের মেঝে রক্তে ভরে যায়। ঘটনাস্থল থেকে ইয়াাছিন ও তোফাজ্জল কৌশলে চলে যায় এবং মোহাম্মদ আলী ঘরের পাশের টিউবওয়েলে গোসল করে রক্তাক্ত কাপড় পরিবর্তন করে।
এদিকে ঘটনার পর স্থানীয় রাশেদ ফরাজী তাদের ঘরে এসে রক্তাক্ত লাশ দেখে রুবেল খুন হয়েছে বলে চিৎকার করে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন মোহাম্মদ আলীকে আটক করে। ঘটনাস্থলে মোহাম্মদ আলীর বাবা জয়নাল আবেদীন উপস্থিত হলে স্থানীয় লোকজন তাকেও আটক করে বাবা-ছেলেকে পুলিশে দেয়।
আটক মোহাম্মদ আলীর স্বীকারোক্তিতে রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে অপর দুই বন্ধু ইয়াছিন ও তোফাজ্জলকে বাস্তুহারা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। রুবেল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শনিবার দুপুরে মোহাম্মদ আলীর বাবা জয়নাল আবেদীন, তিন বন্ধু মোহাম্মদ আলী, ইয়াছিন ও তোফাজ্জলকে কোর্টের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।
তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশিদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মূলত বিভিন্ন কারণে জমে থাকা ক্ষোভ থেকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে তিন বন্ধু মিলে রুবেলকে খুন করে। নিহত রুবেল ও আসামি ইয়াছিন একাধিক হত্যাকাণ্ড ও ডাকাতি মামলার আসামি। এ ঘটনা ঘটেছে মোহাম্মদ আলীর অর্থ্যাৎ তার বাবা জয়নাল আবেদীনের ঘরে এবং মামলার এজাহারনামীয় আসামির তালিকায়ও তিনি আছেন তাই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলমান আছে। ওই ঘটনায় নিহতের বড় ভাই জিয়াউল রহমান বাদী হয়ে গ্রেফতার ৪ জনের নাম উল্লেখসহ ৩-৪ জন অজ্ঞাতনামা রেখে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।’
সম্পাদকীয় কার্যালয় : আছমান ম্যানশন, কদমতলী সিলেট। নিউজ : ০১৬-৪২৫০৫৪৬৬
Design and developed by DHAKA-HOST-BD