ঢাকা ১৬ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:০১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৪, ২০২৫
বাংলা সিলেট ডেস্ক: নেচে-গেয়ে হাজারো মানুষ অংশ নিল ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’য়। এবারের পয়লা বৈশাখের এই বর্ণিল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য—‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে আজ সোমবার সকাল ৯টায় শোভাযাত্রা শুরু হয়। শেষ হয় সকাল সাড়ে ১০টায়।
শোভাযাত্রায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি যুক্ত হন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষের অংশগ্রহণ ছিল। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ফিলিস্তিনে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বানও ছিল শোভাযাত্রায়।
শোভাযাত্রার অন্যতম আকর্ষণ ছিল ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’। এ ছাড়া মাছ, তরমুজসহ বিভিন্ন মোটিফ। ছিল বাংলার ঐতিহ্যবাহী মুখোশ। ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা। এ ছাড়া ছিল পুলিশের অশ্বারোহী দল।
শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের মানুষকে অংশ নিতে দেখা যায়।
শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড়, টিএসসি মোড়, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্র ও দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলা একাডেমির সামনের রাস্তা দিয়ে আবারও চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হয়।
আগেই বলা হয়েছিল, এবারের শোভাযাত্রায় ২৮টি জাতিগোষ্ঠী, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন দেশের অতিথিরা অংশ নিচ্ছেন।
গত শনিবার ভোরে চারুকলা অনুষদের ভেতরে শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা দুটি মোটিফে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ২০ ফুট উচ্চতার ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি নামের মোটিফটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। তার পাশেই রাখা ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফের একটি ডানা ও লেজের খানিকটা পুড়ে যায়।
ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি মোটিফটি বাঁশ ও বেত দিয়ে দাঁতাল মুখের এক নারীর মুখাবয়ব বানানো হয়। মাথায় খাড়া চারটি শিং, হাঁ করা মুখ, বিশালাকৃতির নাক ও ভয়ার্ত দুটি চোখ। এটিকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি হিসেবে ধারণা করেছিলেন অনেকে।
ঘটনার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কালো টি-শার্ট ও বাদামি প্যান্ট পরা এক যুবক চারুকলা অনুষদের দক্ষিণ দিকের গেট টপকে ভেতরে প্রবেশ করেন। যুবকটি ভেতরে এসে ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি মোটিফে তরল দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন। তারপর আর তাঁকে দেখা যায়নি।
শোভাযাত্রার জন্য বানানো ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি পুড়ে যাওয়ার পর সেটি নতুন করে তৈরির কাজ শুরু করেন চারুকলার প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। শনিবার রাতেই থার্মোকল বা সোলা দিয়ে নতুন করে ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি বানানোর কাজ শুরু হয়। এ ছাড়া শোভাযাত্রার জন্য তরমুজের ফালি, বাঘ, ইলিশ, শান্তির পায়রা ও পালকির মোটিফ তৈরির কাজ গতকাল রোববার রাতের মধ্যেই শেষ করা হয়।
যশোরের চারুপীঠ নামে একটি সংগঠন ১৯৮৬ সালে প্রথম পয়লা বৈশাখ আনন্দ শোভাযাত্রা নামে একটি শোভাযাত্রার আয়োজন করে। ১৯৮৯ সাল থেকে রাজধানীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ পয়লা বৈশাখে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করে। তখন এর নাম ছিল ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’। এরপরে নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর নাম রাখা হয় ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’। এর পর থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা নামেই পয়লা বৈশাখে বর্ণাঢ্য এ আয়োজনটি করা হচ্ছিল। এবার শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন করা হয়। এবার এর নাম রাখা হয় ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।
সম্পাদকীয় কার্যালয় : আছমান ম্যানশন, কদমতলী সিলেট। নিউজ : ০১৬-৪২৫০৫৪৬৬
Design and developed by DHAKA-HOST-BD