ঢাকা ২৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২৯, ২০২৫
বাংলা সিলেট ডেস্ক: ‘জালালাবাদ অন্ধ কল্যাণ সমিতি’র অ্যাডহক কমিটি গঠন ও হিসাব পরিচালনার বিষয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন আদালত। ১৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সিলেটের যুগ্ম জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতে বিচারক এই আদেশ দেন। সোমবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী বেদানন্দ ভট্টাচার্য এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে জালালাবাদ অন্ধ কল্যাণ সমিতির অ্যাডহক কমিটি গঠন ও হিসাব পরিচালনার দায়ে সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন।
মামলায় সমিতির সভাপতি ও সিলেটের জেলা প্রশাসক নির্দিষ্ট দায়িত্ব বহির্ভূত কোনো কার্যক্রম দ্বারা সমিতি পরিচালনা, তহবিল বা স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির বিষয়ে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করতে না পারেন, সে বিষয়ে অন্তর্বর্তী আদেশসহ অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন করলে আদালত তা আমলে নেন। একই সঙ্গে ১ নম্বর বিবাদীকে ১৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।
অভিযুক্তরা হলেন, সিলেটের জেলা প্রশাসক ও জালালাবাদ অন্ধ কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও সমিতির সহ-সভাপতি মো. আনোয়ারুজ্জামান।
এছাড়া মামলায় বিবাদী করা হয়েছে বিভাগীয় কমিশনার, রুপালী ব্যাংকের ইসলামপুর করপোরেট শাখার ব্যবস্থাপক, সিলেটের সিভিল সার্জন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক), জেলা সামজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক, সিলেট বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক, সুবিদবাজার এলাকার মৃত গোলাম রাব্বানী চৌধুরীর ছেলে মাহবুব ছোবহান চৌধুরী, অ্যাডভোকেট কাওছার আহমদ ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও সহকারী কমিশনারকে।
আদালতে দাখিল করা মামলায় বাদীপক্ষ উল্লেখ করেন, ১৯৬৪ সালে গঠিত জালালাবাদ অন্ধ কল্যাণ সমিতি একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। মোকদ্দমার ১ নম্বর বিবাদী পদাধিকার বলে সমিতির সভাপতি। গঠনতন্ত্রের ১৩ নম্বর অনুচ্ছেদে সভাপতির নির্দিষ্ট দায়িত্ব কর্তব্য সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।
মামলায় বাদীপক্ষ আরও অভিযোগ করেন, সমিতির বর্তমান কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় নতুন কার্যকরী কমিটি গঠনের লক্ষ্যে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর সাধারণ সভা আহ্বান করা হয়। কিন্তু সভায় কোরাম পূর্ণ না হওয়ায় কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই বিধি মোতাবেক সভা মুলতবি করা হয়।
কিন্তু ২ নম্বর বিবাদী সমিতির সহ-সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ারুজ্জামান জেলা প্রশাসককে সভাপতি এবং মামলার বিবাদী কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তাকে সদস্য করে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে মর্মে প্রচার করেন।
শুধু তাই নয়, ১ নম্বর বিবাদী সমিতির প্যাডে সিলবিহীন একটি পত্রের মাধ্যমে কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও অপারেশনের জন্য ভর্তি রোগীদের ডায়েট বিল বাবদ, বিভিন্ন অঙ্কের তিনটি চেক সইযুক্ত মতে প্রেরণ করে নির্দেশিত মতে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন।
মোকদ্দমায় উল্লেখ করা হয়, জালালাবাদ অন্ধ কল্যাণ সমিতির গঠনতন্ত্রের ১৩ (খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সভাপতি হিসেবে কোনো চেক সই কিংবা অর্থ উত্তোলন করার বিধান নাই।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, ১ নম্বর বিবাদীর উদ্দেশ্যমূলক, আইন ও এখতিয়ার বহির্ভূত কার্যক্রমের ফলে সমিতির তহবিল, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি এবং জনহিতকর কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হওয়ার উপক্রম।
এ বিষয়ে জানতে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার সাড়া মেলেনি।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী বেদানন্দ ভট্টাচার্য বলেন, সমিতির সাধারণ সম্পাদক আদালতে একটি মামলার আবেদন করেন। এতে সমিতির সভাপতি ও জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী আদেশসহ অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন করেন। আদালত জেলা প্রশাসককে ১৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলেছেন।
সম্পাদকীয় কার্যালয় : আছমান ম্যানশন, কদমতলী সিলেট। নিউজ : ০১৬-৪২৫০৫৪৬৬
Design and developed by DHAKA-HOST-BD