মৌলভীবাজারে চালু হচ্ছে শমশেরনগর বিমানবন্দর

প্রকাশিত: ৬:০২ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০২৫

মৌলভীবাজারে চালু হচ্ছে শমশেরনগর বিমানবন্দর

নিজস্ব প্রতিবেদক,মৌলভীবাজার: পরিত্যক্ত থাকা শমশেরনগর বিমানবন্দরসহ আরো কয়েকটি বিমানবন্দর আবার চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ পদক্ষেপের ফলে অভ্যন্তরীণ বিমান পরিবহনব্যবস্থা গতিশীল হবে। বাড়বে পর্যটন, বাণিজ্য ও আঞ্চলিক উন্নয়ন। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ও খাতসংশ্লিষ্ট সূত্রে এ কথা জানা গেছে।

জানা যায়, এই ভূখণ্ডে ব্রিটিশ আমলে ২৮টি বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠা করা হয়। সেগুলোর মধ্য থেকে সাতটি বিমানবন্দর আবার চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বগুড়া, মৌলভীবাজারের শমশেরনগর, লালমনিরহাট, ঈশ্বরদী ও ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দর। বাকি দুই বিমানবন্দরের নাম এখনো জানা যায়নি।

এই বিমানবন্দরগুলো নানা কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকার দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে দ্রুত ও সুলভ পরিবহনব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য এসব বিমানবন্দর চালুর উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে। আগামী জুলাই মাসেই বগুড়া বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া গনমাধ্যমকে বলেন, ‘আকাশপথের যোগাযোগ বাড়াতে আমরা পরিত্যক্ত বিমানবন্দরগুলো যাচাই-বাছাই করছি। সবার আগে বগুড়া বিমানবন্দর চালু হবে। আশা করছি, জুনে সব কাজ শেষ করে জুলাই মাসে বগুড়ায় ফ্লাইট পরিচালনা করা যাবে।’

বগুড়া বিমানবন্দরের নির্মাণকাজ ১৯৯৬ সালে শুরু হয়ে ২০০০ সালে শেষ হয়। নতুন করে চালু করতে এ বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ ও লাইট স্থাপনসহ বেশ কিছু কাজ চলমান রয়েছে। বেবিচক সূত্র জানায়, এগুলো জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। বাংলাদেশ বিমানসহ অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনাকারীদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। দ্রুতই ঢাকা-বগুড়া রুটে একাধিক এয়ারলাইনসের ফ্লাইট চালু হবে।

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ এ টি এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় ঈশ্বরদী বিমানবন্দর চালুর বিষয়ে প্রধান্য দেওয়া উচিত। এ ছাড়া ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দর চালুর উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। কারণ ঢাকা-ঠাকুরগাঁও যাতায়াতে অনেক সময় লাগে। তাই বিমানবন্দরটি চালু করা হলে একটা ভালো ট্রাফিক পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা যায়। এ ছাড়া আগে চালু থাকায় লালমনিরহাট ও শমশেরনগর বিমানবন্দর এখন দ্রুত চালু করা যেতে পারে।’

তবে কিছু বিমানবন্দর সচল করতে বড় ধরনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, রানওয়ে সংস্কার, টার্মিনাল নির্মাণ, নিরাপত্তাব্যবস্থা, জনবল নিয়োগসহ বিভিন্ন দিক বিবেচনায় রাখা হচ্ছে। সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ ও বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় এসব প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পরিত্যক্ত বিমানবন্দর সচল করা একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। এটি শুধু যোগাযোগব্যবস্থার সম্প্রসারণ নয়, বরং দেশের সার্বিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। সঠিক পরিকল্পনা ও দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচলে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।