ঢাকা ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:৫০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১১, ২০২৪
বাংলা সিলেট ডেস্ক: দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সিলেটে টিলা, নদী, এমনকি পর্যটনস্থল থেকে পাথর উত্তোলন বেড়ে যাওয়ায় পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে, যা ভূ–প্রকৃতিকে বড় ঝুঁকিতে ফেলবে বলে মত প্রকাশ করেছেন পরিবেশবিদরা। তাদের মতে, ফলে অবৈধ পাথর উত্তোলনে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির দিকটি নিরূপণ করতে বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে গবেষণায় জোর দিতে হবে।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় নগরীর একটি হোটেলে ‘সিলেটে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। সভায় বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সিলেটের বিভাগীয় প্রধান সৈয়দা শিরিন আক্তারের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন বেলার সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক শাহ শাহেদা আখতার।
অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুর ও পরিবেশ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. মিছবাহ উদ্দিন, পেট্রোলিয়াম ও খনি প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম। আরও বক্তব্য দেন সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল সিদ্দীকি, সভাপতি ইকরামুল কবীর ও বেলার নেটওয়ার্ক সদস্য ইরফানুজ্জামান চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে মিছবাহ উদ্দিন বলেন, ‘১৯৯৩ সালে যখন জাফলংয়ে গিয়েছিলাম। তখন সেখানে পরিববেশগত একটি বৈচিত্র্য ছিল; কিন্তু এখন আর তা নেই। সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের বিষয়ে যে আলোচনা হচ্ছে, তা তখনই সম্ভব যখন সেখানকার পরিবেশ আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আগের অবস্থায় ফিরলে তখন সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন করা যেতে পারে। পাশাপাশি পাথর কোয়ারিগুলো থেকে ড্রেজার মেশিন ব্যবহার করে অবৈধভাবে লাগামহীন পাথর উত্তোলনে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা গবেষণা করা প্রয়োজন। পাথর কোয়ারিকেন্দ্রিক পর্যনটনশিল্প ও পাথর উত্তোলনের রাজস্ব কেমন- এ দুটি বিষয়ে তুলনামূলক গবেষণা ও জরিপ প্রয়োজন। কোনটা থকে সরকার রাজস্ব বেশি পাচ্ছে। পর্যটন খাতে বেশি রাজস্ব আয় হলে তা সমৃদ্ধ করার জন্য সরকারকে সেই খাতে গুরুত্ব দিতে হবে।’
শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনে কয়েকটি সুবিধা আছে। এ জন্য অনেক জনবলের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। তবে এর পাশ কাটিয়ে ব্যবসায়ী মালিকেরা ভিন্ন পথ অবলম্বন করেন। তাঁরা যন্ত্রের ব্যবহার করে পাথর উত্তোলন করছেন। তাঁরা যুক্তি দেন যে পাথর উত্তোলন না করলে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়; কিন্তু বাস্তবে এটি অজুহাত। জাফলংয়ের নদীতে পাথর জমে থাকায় পানির প্রবাহ স্বাভাবিক রয়েছে। বর্তমান প্রশাসন দুর্বল। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। প্রশাসনকে জবাবাদিহির আওতায় আনতে হবে।’
পাথর উত্তোলন নিয়ে পত্রিকা ও টেলিভিশনে প্রতিনিয়ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে। তবে শুধু প্রতিবেদন হলেই হবে না, প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে বলে মত দিয়েছেন বক্তারা। এ ক্ষেত্রে প্রশাসন উদাসীন বলেও জানান অনেকে।
সম্পাদকীয় কার্যালয় : আছমান ম্যানশন, কদমতলী সিলেট। নিউজ : ০১৬-৪২৫০৫৪৬৬
Design and developed by DHAKA-HOST-BD